“এমন যদি হত
ইচ্ছে হলেই আমি হতাম
প্রজাপতির মত।”

কবি সুকুমার বড়ুয়ার এমন যদি হতো কবিতার এ চরণযুগলের মতো শিশুদের মনে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির সৌন্দর্য এবং শিশুমনের সরল ও গভীর অনুভূতির প্রকাশ ঘটানোর লক্ষ্যে, গত ১৫ই মে ২০২৫, বৃহস্পতিবার,বিদ্যালয়ে এল. এম. আর হলরুমে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল প্রাক- প্রাথমিক পর্যায়ের বাংলা কবিতা আবৃত্তি প্রতিযোগিতার আসর। এই প্রতিযোগিতা শুধুমাত্র একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ছিল না, এটি ছিল আমাদের ক্ষুদে শিক্ষার্থীদের জন্য আত্মবিশ্বাস, মঞ্চভীতি দূরীকরণ ওমনের সুপ্ত ভাবনা সুন্দরভাবে প্রকাশের এক মূল্যবান সুযোগ তৈরি করে দেয়া।

অনুষ্ঠানটির শুভসূচনা হয় জাতীয় সংগীত গাওয়ার মাধ্যমে। এরপর আমাদের সম্মানিত নির্বাহী পরিচালক জনাব জ্ঞানেশ চন্দ্র ত্রিপাঠী এবং জুনিয়র শাখার অধ্যক্ষ নীতি ত্রিপাঠী মহোদয়ের অনুপ্রেরণামূলক বক্তব্য দেন । তাঁদের বক্তব্যে শিশুদের মনোজগতে সাহিত্যের প্রভাব এবং প্রাথমিক স্তরে বাংলা ভাষা বিকাশের গুরুত্ব নিয়ে অত্যন্ত মননশীল দিকনির্দেশনা প্রদান করেন। এছাড়াও  শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা এবং বিদ্যালয়ের সার্বিক অগ্রগতিতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের অবদানের কথা উঠে আসে তাঁদের বক্তব্যে।

এ অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন সম্মানিত শাখা সমন্বয়ক মিস আমরিন হোসাইন এবং সহ শাখা সমন্বয়ক মিস ফাহমিদা হায়দার, যাঁরা সার্বিকভাবে অনুষ্ঠানের সুশৃঙ্খল পরিচালনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।

 প্রাক-প্রাথমিক বিভাগের শিক্ষার্থীরা একে একে মঞ্চে এসে আবৃত্তি করে মনোমুগ্ধকর পরিবেশনা উপস্থাপন করে। শিশুদের কণ্ঠে বাংলা কবিতার ছন্দ, ভাব, আবেগ ও স্বতঃস্ফূর্ততা উপস্থিত দর্শকদের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। প্রত্যেক শিশুর মধ্যে ছিল উৎসাহ,উদ্দীপনা এবং মনের গভীর থেকে বাংলা কবিতার প্রতি ভালোবাসা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত অভিভাবকরা তাঁদের সন্তানদের উপস্থাপন কৌশল দেখে আপ্লzত হন এবং বিদ্যালয়ের এ ধরনের কার্যপ্রক্রিয়ার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

প্রতিযোগিতার প্রতিটি পরিবেশনা এতটাই প্রাণবন্ত ও হৃদয়গ্রাহী ছিল যে বিচারকমণ্ডলীর জন্য প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান নির্ধারণ করা সত্যিই একটি কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়ে ছিল। চূড়ান্তভাবে ফলাফল ঘোষণা করেন আমাদের সম্মানিত অধ্যক্ষ নীতি ত্রিপাঠী মহোদয়, যিনি শুধুমাত্র বিজয়ীদের নয়, প্রতিটি অংশগ্রহণকারী শিশুকে আন্তরিকভাবে শুভেচ্ছা ও উৎসাহ প্রদান করেন।

অনুষ্ঠানের সমাপনী বক্তব্যে শাখা সমন্বয়ক মিস আমরিন হোসাইন একটি হৃদয়স্পর্শী বক্তব্য রাখেন, যেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের মেধা ও সাহসিকতার প্রশংসা করেন এবং তাদের আগামী দিনে আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করেন।

সবশেষে বলা যায়, এই ধরনের প্রতিযোগিতার মাধ্যমে শিশুস্তর থেকেই শিক্ষার্থীদের সঠিক দিকনির্দেশনা ও অনুপ্রেরণা প্রদান করা গেলে তারা নিজেদের গুণাবলি প্রকাশের সুযোগ পায়। বাংলা কবিতা আবৃত্তির এই আয়োজন শিক্ষার্থীদের বাংলা ভাষার প্রতি ভালোবাসা, কথা বলার সাহসিকতা এবং সৃজনশীলতা বিকাশে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এটি নিঃসন্দেহে বিদ্যালয়ের জন্য একটি স্মরণীয় ও গর্বের মুহূর্ত হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকবে।

Menu